জুয়া

জুয়া বা বাজী হচ্ছে এমন একটা খেলা যা লাভ বা লোকশানের মধ্যে ঝুলন্ত থাকে।জুয়া খেলায় মূলত নির্দিষ্ট পরিমানের অর্থ বা বস্তু (যা পুরস্কার হিসেবে ধার্য করা হয়) নির্ধারণ করা হয়।তারপর কোনো একটি বিষয়ে দুই পক্ষ চুক্তি করে হার জিত নির্ধারণ করে। যে পক্ষ হেরে যায় সে অপর পক্ষকে সেই নির্ধারিত অর্থ বা বস্তু প্রদান করে। এই খেলায় হেরে যাওয়া বা জিতে যাওয়াতে উভয় পক্ষেরই ঝুকি নিতে হয়। জুয়া খেলায় বিজয়ী পক্ষ পুরস্কারের অর্থ কখনো সাথেসাথে পেয়ে থাকে আবার কখনো তা পেতে দেরী হয়।

যদিও জুয়া খেলা প্রায় সব দেশেই আইন স্বীকৃত না। তবুও প্রতিনিয়তই এটি চলছে। ২০১৬ সালের হিসাব অনুযায়ি ৪৫০ বিলিয়ন ইউএস ডলার পরিমান অর্থ জুয়া খেলায় ব্যবহৃত হয়েছে। যা ২০১৯ এ এসে ৪৯৫ বিলিয়ন মার্কিন মুদ্রায় এসে দাঁড়াবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। আন্তর্জাতিকভাবে জুয়া একটি বড় মার্কেট দখল করে আছে।

জুয়া খেলার ইতিহাসঃ

প্রাচীন প্রস্তর যুগের আগেও জুয়া খেলার প্রচলণ ছিল বলে ধারণা করা হয়। যিশু খিষ্ট্রের জম্মের ৩০০০ বছর পূর্বে ইরাক, সিরিয়া,তুরস্কের বিভিন্ন জায়গায় বাজী খেলা হত ছয় পার্শ বিশিষ্ট ছোট ছোট গুটি আকৃতির বস্তু দিয়ে যা এখন পাশা নামে পরিচিত।যিশু খিষ্ট্রের জম্মের ১০০০ বছর পূর্বে চীন দেশে পশু লড়াইয়ের উপর বাজী ধরার ব্যপক প্রচলন ছিল।

১৬৩৮ সালে ইতালীর ভেনিসে প্রথম জুয়া খেলার আসর হয়।

ইংল্যান্ড ও আমেরিকাতেও জুয়া খেলা বেশ প্রাচীন। ঘোড়াদৌড় জুয়া খেলার জন্য জনপ্রিয় ছিল।

ধর্মীয় দৃষ্টিকোণে জুয়াঃ

ইসলাম -

ইসলাম ধর্মে জুয়া সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ। পবিত্র কুরআনে আল্লাহ তা'আলা বলেন--

"নিশ্চয় শয়তান মদ ও জুয়ার দ্বারা তোমাদের পরস্পরে শক্রতা ও হিংসা-বিদ্বেষ সৃষ্টি করতে চায় এবং তোমাদেরকে আল্লাহর যিকির ও নামায থেকে বিরত রাখতে চায়, সুতরাং তোমরা কি এগুলো থেকে বিরত থাকবে’’? (সূরা মায়িদা, আয়াত-৯১)

হিন্দুধর্ম-

হিন্দুদের "মহাভারত" এ প্রাচীন ভারতে জুয়া খেলা বেশ জনপ্রিয় ছিল বলে জানা যায়।

ইহুদি-

প্রাচীন ইহুদি সম্প্রদায়েও জুয়াকে নিকৃষ্ট নজরে দেখা হত।এমনকি আদালতে কোনো জুয়ারীর সাক্ষ্য গ্রহণ করা হত না।

খ্রিষ্টধর্ম-

খ্রিষ্টানদের অনেকে জুয়াকে বৈধ ও অনেক ধর্মযাজক অবৈধ ঘোষণা করেছে।

জুয়ার প্রকারঃ

বিভিন্ন রকম জুয়ার প্রচলন আছে। বর্তমানে জুয়াঘরে ও জুয়াঘর এর বাইরে জুয়া খেলা হয়। ভিডিও জুজু, লোটাখেলা ইত্যাদি জুয়াঘরে খেলা যায়। এছাড়া কার্ড,কয়েন টস,পাশা ইত্যাদি খেলা জুয়াঘরের বাইরেও খেলা যায়।

বর্তমানে সবচেয়ে বড় জুয়ার আসর হল ক্রীড়া অঙ্গন। ফুটবল, ক্রিকেট, বাসকেটবল ইত্যাদি খেলাতেও জুয়ারীরা বাজী খেলে থাকে।

এছাড়া এক জন আরেক জনের সাথে কোন বিষয়ে সত্য বা মিথ্যা হওয়া নিয়েও বাজী খেলে থাকে।

নেতীবাচক প্রভাবঃ

জরীপে জানা গেছে প্রাথমিকভাবে যারা কেবল বিনোদনের জন্য জুয়া খেলা শুরু করেছিল তাদের অনেকেই এটাতে আসক্ত হয়ে গেছে।এই আসক্তি তাদের বিভিন্ন কুকর্মের দিকে ঠেলে দেয়। জুয়ার অর্থ জোগারের জন্য তারা খারাপ কাজ করতে শুরু করে। জুয়ায় হারানো অর্থ ফেরত পাবার জন্য জুয়ারীরা বারবার জুয়া খেলে। জুয়া ব্রেইনে মারাত্বক প্রভাব পরে,জুয়ারীরা চিন্তাগ্রস্থ ও অসহায়ত্ব অনুভব করে অসুস্থ হয়ে যায়।


This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.