জালাল উদ্দিন খাঁ

জালাল উদ্দিন খাঁ (১৮৯৪-১৯৭২) হলেন পূর্ব ময়মনসিংহের একজন বিশিষ্ট বাউল কবি ও গায়ক।

জালাল উদ্দিন খাঁ
প্রাথমিক তথ্য
মৃত্যু৩১ জুলাই ১৯৭২
ধরনবাউল গান
পেশাবাউল কবি
কবি জালাল খাঁ

সংক্ষিপ্ত জীবনী

জালাল উদ্দিন খাঁ ব্রিটিশ ভারতের নেত্রকোনা জেলার কেন্দুয়া উপজেলার আসদহাটি গ্রামে ১৮৯৪ সালে ২৫ এপ্রিল তিনি জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম সদরুদ্দীন খাঁ।[1] বিংশ শতাব্দীর বিশ থেকে ষাটের দশক অবধি প্রাকৃত বাঙালিজনের এই গীতিকবি তার সাধনায় সক্রিয় ছিলেন। আত্মতত্ত্ব, পরমতত্ত্ব, নিগূঢ়তত্ত্ব, লোকতত্ত্ব, দেশতত্ত্ব ও বিরহতত্ত্বের নামাঙ্কিতের মাঝে জালাল উদ্দিন প্রায় সহস্রাধিক গান রচনা করেছিলেন। প্রখ্যাত এই লোক কবি মালজোড়া গানের আসরেও ছিলেন অনন্য। জালাল উদ্দীন খাঁ অনেক গান রচনা করেছিলেন। তার জীবদ্দশায় চার খণ্ডের ‘জালাল-গীতিকা’ গ্রন্থে ৬৩০টি গান প্রকাশিত হয়েছিল। তার মৃত্যুর পর প্রকাশিত হয় ‘জালাল-গীতিকা’ পঞ্চম খণ্ড। সেই খণ্ডে গানের সংখ্যা ৭২টি। এই মোট ৭০২টি গান নিয়ে ২০০৫ সালের মার্চে প্রকাশিত হয়েছে ‘জালাল গীতিকা সমগ্র।’ জালাল তার গানগুলোকে বিভিন্ন ‘তত্ত্ব’তে বিন্যস্ত করে প্রকাশ করেন। সেই তত্ত্বগুলোর নামগুলো হলো- আত্মতত্ত্ব, পরমতত্ত্ব, নিগূঢ় তত্ত্ব, লোকতত্ত্ব, দেশতত্ত্ব, বিরহতত্ত্ব। ‘জালালগীতিকা’র অধিকাংশ গানই এরকম তত্ত্বনামাঙ্কিত হলেও অনেক গানকে জালাল খাঁ তত্ত্বের অন্তর্ভুক্ত করেননি। যেমন- ‘জালাল গীতিকা’ প্রথম খণ্ডে সংকলিত ২০২টি গানের মধ্যে ২০টি গান ‘ভাটিয়ালি’ নামাঙ্কিত। দ্বিতীয় খণ্ডের ২২৮টি গানের ৬০টিই ‘ভাটিয়ালি’। তৃতীয় খণ্ডের ৭৮টি গানের সাতটি ‘তত্ত্ব’ বিষয়ে, আর ১৪টি ‘মুর্শিদি’ ও ১১টি ‘মারফতি’ নামাঙ্কিত গান। ‘জালাল গীতিকা’র চতুর্থ খণ্ডে কোনো তত্ত্ব নির্দেশ ছাড়াই বাউল সুর, ঝাপতাল, চৌপদী, প্রসাদ সুর, মুকুন্দ সুর, খেমটা নামে মোট ১০১টি গান সংকলিত হয়েছিল। তার মৃত্যুর পর উত্তরসূরিদের হতে ‘জালাল গীতিকা’র যে পঞ্চম খণ্ড প্রকাশিত হয় তাতে গীতিগুলোর কোনোরূপ শ্রেণীবিন্যাস বা নামাঙ্কন করা হয়নি। নব এই প্রকাশনায় জালালের জীবৎকালে অপ্রকাশিত বিভিন্ন ধরনের ৭২টি গীতি সংকলন করা হয়। তাছাড়া " বিশ্ব রহস্য " নামে একটি প্রবন্ধ গ্রন্হ প্রকাশ করেন।[2] ১৯৭২ সনে ৩১ জুলাই বাংলা ১৬ই শ্রাবণ, ১৩৭৯ দুই পুত্র তিন কন্যা, এবং স্ত্রী শামছুন্নাহার বেগমকে রেখে দেহত্যাগ করেন। নিজ গ্রামের বাড়ীর আঙ্গিনায় তার মাজার অবস্থিত।[3] প্রয়াত মরমী বাউল সাধক জালাল উদ্দিন খাঁ স্মরণে প্রতি বছর দু’দিন ব্যাপী পালিত হয় জালাল মেলা।[4][5]

তার সৃষ্টিকর্মের পূর্ণ তথ্য এখানে-

কয়েকটি গানের লিংক-

তথ্যসূ্ত্র

  1. "মরমী সাধক জালাল উদ্দিন খাঁ"। ষড়ঋতু ডট কম। ৪ মার্চ ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৬ মে ২০১৪
  2. "আত্মসন্ধানী কবি, মরমী বাউল সাধক জালাল উদ্দীন খাঁ"। সন্তোষ সরকার। banglanewsline.com। সংগ্রহের তারিখ আগস্ট ৫, ২০১৪
  3. "আত্মসন্ধানী কবি, মরমী বাউল সাধক জালাল উদ্দীন খাঁ"। banglanewsline.com। সংগ্রহের তারিখ আগস্ট ৫, ২০১৪
  4. "বাউল সাধক জালাল খাঁ'র মৃত্যুবার্ষিকীতে রাতভর বাউল গানের আসর"। বাংলানিউজলাইন ডটকম। সংগ্রহের তারিখ আগস্ট ৩, ২০১৪
  5. "কেন্দুয়ায় জালালের মাজার প্রাঙ্গণে বাউল মেলা"। সমকাল। ৪ মার্চ ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৬ জুন ২০১৩
This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.