জাতীয় সংসদ সদস্য

সংসদ সদস্য হলেন দেশের সর্বোচ্চ আইন প্রণয়নকারী প্রতিষ্ঠান জাতীয় সংসদের একজন সদস্য। সাধারণত তিনি জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটে নির্বাচিত হয়ে থাকেন। তবে নারীদের জন্য পরোক্ষভাবে সংসদ সদস্য মনোনীত হওয়ার রেওয়াজ প্রচলিত রয়েছে। সংসদ সদস্যকে কখনো কখনো “সাংসদ” হিসাবে অভিহিত করা হয়ে থাকে। সংসদ সদস্য ইংরেজি মেম্বার অব পার্লামেন্ট' (এমপি) বা মেম্বার অব দ্য লেজিসলেটিভ এসেম্বলি’র (এমএলএ) বাংলা প্রতিশব্দ। ফরাসী ভাষায় সংসদ সদস্যকে 'ডেপুটি' নামে অভিহিত করা হয়। যে সকল দেশে দ্বি-কক্ষবিশষ্ট আইন প্রণয়নকারী প্রতিষ্ঠান রয়েছে, সেখানে সংসদ সদস্য বলতে নিম্নকক্ষের সদস্যকে বোঝানো হয়ে থাকে। তবে বাংলাদেশে এক কক্ষবিশিষ্ট সংসদীয় স্তর বিরাজমান।

নির্বাচনে অংশগ্রহণের যোগ্যতা

বাংলাদেশের সংবিধানের ৬৬ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী জাতীয় সংসদের সদস্যতা লাভের জন্য বাংলাদেশের নাগরিক হওয়াসহ বয়সসীমা অবশ্যই ২৫ বছরের ঊর্ধ্বে হতে হবে। তবে ব্যক্তি যদি দ্বৈত নাগরিকত্ব লাভ করেন, তাহলেও তিনি 'এমপি' বা সংসদ সদস্য হবার যোগ্যতা অর্জন করতে পারবেন না।[1] বাংলাদেশের জাতীয় সংসদে ৩০০ জন্য সংসদ সদস্য রয়েছেন যারা জনগণের সরাসরি ভোটাধিকার প্রয়োগের মাধ্যমে নির্বাচত। নারী কোটায় মনোনীত নারী সংসদ সদস্যের সংখ্যা ৪৫। দলীয় মানদণ্ডে মহিলা সংসদ সদস্যের কোটা নির্ধারিত হয়। একজন ব্যক্তি একাধিক সদস্য পদ লাভ করতে পারবেন না। যদি তিনি একাধিক স্থান থেকে নির্বাচিত হন, তাহলে একটি আসনের সদস্য হিসেবে তিনি থাকবেন। বাকী আসনগুলোয় পরবর্তীতে উপ-নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

সংরক্ষিত আসন

মহিলাদের জন্য বাংলাদেশের জাতীয় সংসদের ৫০ টি আসন সংরক্ষিত আছে। আগে এই সংখ্যা ছিল ৩০। এ কোটায় নির্বাচিত নারী সংসদ সদস্যরা প্রত্যক্ষ ভোটে নির্বাচিতদের সমান মর্যাদা ও সুযোগ-সুবিধা ভোগ করে থাকেন। দলীয় মানদণ্ডে মহিলা সংসদ সদস্যের কোটা নির্ধারিত হয়ে থাকে।

নিদর্লীয় সংসদ সদস্য

উপ-নির্বাচন

সংসদে আসন বণ্টন ব্যবস্থা

ওয়েস্টমিনিস্টার রীতি অনুযায় সংসদের স্পীকারের ডান পাশে সরকারী দলের সদস্যদের জন্য আসন বরাদ্দ করা হয়। বিরোধী দলীয় সংসদ সদস্যদের জন্য আসন বণ্টন করা হয় স্পীকারের বাম পার্শ্বে। সংসদ সদস্য হিসাবে যারা জ্যেষ্ঠ্য অর্থাৎ আগেও সংসদ সদস্য হিসাবে নির্বাচিত হয়ে সংসদ সদস্য হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছেন তাদের সাধারণত সামনের সারিতে আসন দেয়া হয়। বাংলাদেশের জাতীয় সংসদে প্রত্যেক সংসদ সদস্যের জন্য পৃথক ও নির্ধারিত আসন রয়েছে।

সংসদ সদস্যদের দায়িত্ব

সংসদ সদস্য নিয়মিতভাবে জাতীয় সংসদের অধিবেশনে যোগ দেবেন এবং জাতীয় সংসদের কার্যবিধি অনুযায়ী স্বীয় দায়িত্ব পালন করবেন। তিনি একনাগাড়ে ৯০ দিন অনুপস্থিত থাকলে তার সদস্যপদ হারাবেন। একজন সংসদ সদস্য আইন প্রণয়নের উদ্দেশ্যে যথাযথ পদ্ধতি অবলম্বনপূর্ব্বক বিল উত্থাপন করতে পারবেন এবং তিনি অন্য কোন সংসদ সদস্য কর্তৃক উত্থাপিত বিলের ওপর ভোট দিতে পরবেন। ১৫ দিনের নোটিশসাপেক্ষে তিনি জাতীয় সংসদের অধিবেশনে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রশ্ন উত্থাপন করতে পারবেন। স্পীকারের অনুমোদনসাপেক্ষে তিনি জনগুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণমূলক বক্তব্য প্রদান করতে পারবেন।

কার্যকাল, পদত্যাগ, অভিশংসন

একজন সংসদ সদস্য ৫ বৎসরের জন্য নির্বাচিত হয়ে থাকেন। নির্বাচিত হওয়ার পর পরই তাকে জাতীয় সংসদের সদস্য হিসাবে শপথ গ্রহণ করতে হয়। পদত্যাগ, মৃত্যু বা অভিশংসনে কারণে সদস্যপদ শূন্য হলে উপ-নির্বাচনের মাধ্যমে তা পূরণের রেওয়াজ আছে। কার্যকালে তিনি নিজ দল থেকে পদত্যাগ করলে সদস্যপদ হারাবেন। এছাড়া তিনি স্বীয় দল কর্তৃক উত্থাপিত বিলের বিরূদ্ধে ভোট দিলেও সদস্যপদ হারাবেন।

মর্যাদা - ওয়রেন্ট অব প্রিসিডেন্স

বাংলাদেশের ওয়রেন্ট অব প্রিসিডেন্স অনুযায়ী মন্ত্রীদের পরেই সংসদ সদস্যদের আনুষ্ঠানিক পদমর্যাদা। তবে কেবিনেট সচিবের অবস্থান এক ধাপ ওপরে।

বেতন-ভাতা-সুবিধাদি

বিশেষ অধিকার

আরও দেখুন

তথ্যসূত্র

  1. "Bangladesh Constitution" (PDF)। Parliament of Bangladesh। সংগ্রহের তারিখ ১২ এপ্রিল ২০১১
This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.