জলবায়ু পরিবর্তন

কোন জায়গার গড় জলবায়ুর দীর্ঘমেয়াদী ও অর্থপূর্ণ পরিবর্তন যার ব্যাপ্তি কয়েক যুগ থেকে কয়েক লক্ষ বছর পর্যন্ত হতে পারে তাকে জলবায়ু পরিবর্তন (ইংরেজি: Climate change) বলা হয়। জলবায়ু পরিবর্তন বিভিন্ন নিয়ামকের উপর নির্ভরশীল; যেমন- জৈব প্রক্রিয়াসমূহ, পৃথিবী কর্তৃক গৃহীত সৌর বিকিরণের পরিবর্তন, ভূত্বক গঠনের পাততত্ত্ব (plate tectonics), আগ্নেয়গিরির অগ্নুৎপাত, ইত্যাদি। তবে বর্তমান কালে সামাজিক ও রাজনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে জলবায়ু পরিবর্তন বললে সারা পৃথিবীর ইদানীং সময়ের মানবিক কার্যকর্মের কারণে জলবায়ু পরিবর্তন বোঝায় যা ভূমণ্ডলীয় উষ্ণতা বৃদ্ধি বেশি পরিচিত। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে পৃথিবীর বায়ুমন্ডলের তাপমাত্রা, বায়ুচাপ, বাতাস, ইত্যাদি।

জলবায়ু পরিবর্তনের কারণসমূহ

বেশ কয়েকটি প্রাকৃতিক প্রক্রিয়ার ওপর জলবায়ুর পরিবর্তন নির্ভর করে। এর মধ্যে যেমন আছে পৃথিবীর বিভিন্ন গতিশীল প্রক্রিয়া, তেমন আছে বহির্জগতের প্রভাব । শেষোক্ত কারণটির মধ্যে থাকতে পারে সৌর বিকিরণের মাত্রা, পৃথিবীর অক্ষরেখার দিক-পরিবর্তন কিংবা সূর্যের তুলনায় পৃথিবীর অবস্থান । বর্তমান সময়ে মনুষ্যজনিত গ্রীন হাউজ গ্যাসের ফলে পৃথিবীর উষ্ণায়নকে জলবায়ু পরিবর্তনের একটি অন্যতম কারণ ধরা হয়। জলবায়ুর বৈজ্ঞানিক মডেলে এই সমস্ত সূচককে ইংরেজিতে অনেক সময় Climate Forcing বলে সম্বোধন করা হয়।

হিমবাহতা

আন্টার্টিক তুষার আস্তর। শৈত্য বা বরফ যুগে তুষার আস্তরের আয়তন বাড়ে।
আন্টার্টিকের ভাস্তক স্টেশনের গত ৪০০,০০০ বছরের ভূগর্ভস্থ্ বরফের তাপমাত্রার হ্রাস-বৃদ্ধি,CO2, এবং ধূলিকনার পরিমাণ

জলবায়ু পরিবর্তনের অন্যতম সংবেদনশীল সূচক হিসাবে হিমবাহদের হ্রাস-বৃদ্ধিকে ধরা হয়[1].। জলবায়ু শীতল হলে হিমবাহের আকার বাড়ে আর উষ্ণ জলবায়ুতে হিমবাহের আয়তন ও সংখ্যা কমে যায়। শৈত্যযুগ বা বরফযুগের সময় পৃথিবীর একটা বিরাট অঞ্চল হিমবাহ ও তুষার আস্তরের নিচে ঢাকা থাকে।

আজ থেকে হয়তো ৩ মিলিয়ন বা ৩০ লক্ষ বছর আগে প্রায় হঠাৎ করেই পৃথিবীতে একটা পর্যায়ক্রমিক শৈত্যযুগ ও অন্তর্বর্তীকালীন উষ্ণ যুগের সূত্রপাত হয়। কেন এইভাবে শৈত্য ও উষ্ণ যুগ চক্রের আবির্ভাব হল তাই নিয়ে বিজ্ঞানীদের মধ্যে মতভেদ আছে, তবে অনেকে মনে করেন পৃথিবীর মহাদেশগুলোর পারস্পরিক অবস্থান, সূর্যের তুলনায় পৃথিবীর কক্ষপথ ও পৃথিবীর অক্ষরেখার দিক পরিবর্তন, ইত্যাদি বিভিন্ন জিনিস এর জন্যে দায়ী। কারণ যাই হোক না কেন এখন দেখা যাচ্ছে যে দুটি উষ্ণ যুগের চূড়ান্ত পর্যায়ের মাঝে সময় হচ্ছে প্রায় ১,০০,০০০ বা এক লক্ষ বছর । তবে এক লক্ষ বছর নিতান্তই একটা আনুমানিক সময়, এই সময়টা ৮০,০০০ বছর থেকে ১,২০,০০০ বছরের মধ্যে ধরা যেতে পারে। আবার এই অন্তর্বর্তীকালীন সময়ে ছোট ছোট শৈত্য বা উষ্ণ যুগের অবস্থান হতে পারে।

তথ্যসূত্র

  1. Seiz G., Foppa N., The activities of the World Glacier Monitoring Service, 2007, ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২৫ মার্চ ২০০৯ তারিখে
This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.