গুহ্যসমাজতন্ত্র

গুহ্যসমাজতন্ত্র বজ্রযান বৌদ্ধধর্মের অন্যতম প্রধান একটি তন্ত্র বিশেষ।

সপ্তদশ শতাব্দীর তিব্বতী থাংকায় গুহ্যসমাজতন্ত্রের দেবতা অক্ষোভ্যবজ্র ও তাঁর সঙ্গিনী স্পর্শবজ্রা

বর্ণনা

গুহ্যসমাজতন্ত্র সতেরোটি অধ্যায় নিয়ে গঠিত। উত্তরাতন্ত্র বা ব্যাখ্যাতন্ত্র নামক একটি পৃথক তন্ত্রকে অনেক সময় এই তন্ত্রের অষ্টাদশ অধ্যায় হিসেবে মনে করা হয়। অনেক পন্ডিতের মতে প্রথম বারোটি অধ্যায় এই তন্ত্রের মূল অংশ এবং পরবর্তী অধ্যায়গুলি পরবর্তীকালে যোগ করা হয়েছে। গুহ্যসমাজতন্ত্র মহাযোগতন্ত্রের অন্তর্গত। তিব্বতে এই তন্ত্রকে র্নাল-'ব্যোর-ব্লা-মেদ-র্গ্যুদ নামে অভিহিত করা হয়। সর্বতথাগততত্ত্বসংগ্রহ নামক প্রাচীন পুঁথিতে এই তন্ত্রের উল্লেখ পাওয়া যায়। সংস্কৃত ভাষায় এবং তিব্বতীচীনা অনুবাদে এই তন্ত্রের পুঁথির অস্তিত্ব পাওয়া যায়।

উৎপত্তি

বৌদ্ধ প্রবাদানুসারে, বজ্রধর গুহ্যসমাজতন্ত্র সম্বন্ধে ওড্ডিয়ানের রাজা ইন্দ্রভূতিকে সর্বপ্রথম শিক্ষাদান করেন। পরবর্তীকালে এই তন্ত্র বিভিন্ন বৌদ্ধ পন্ডিতদের মধ্যে দিয়ে প্রচারিত হয়। এই তন্ত্র অষ্টম শতাব্দীর বৌদ্ধ পন্ডিত বুদ্ধশ্রীজ্ঞানের মাধ্যমে জ্ঞানপদ ঐতিহ্য বা য়ে-শেস-ঝাব্স-লুগ্স (ওয়াইলি: ye shes zhabs lugs) নামে প্রচারিত হয়। ঐতিহাসিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ আর্য ঐতিহ্য বা গ্সাং-'দুস-'ফাগ্স-লুগ্স (ওয়াইলি: gsang 'dus 'phags lugs) নামে অপর একটি ঐতিহ্য নাগার্জুন, আর্যদেব এবং চন্দ্রকীর্তি প্রমুখ বৌদ্ধ পন্ডিতদের টীকাভাষ্যের ওপর নির্ভরশীল ছিল। তিব্বতে মার-পা-ছোস-ক্যি-ব্লো-গ্রোস এই তন্ত্রের প্রচলন করেন।

প্রধান দেবতা

জ্ঞানপদ ঐতিহ্যের কেন্দ্রীয় দেবতা পীতবর্ণের মঞ্জুবজ্র মঞ্জুশ্রীর অপর একধরনের রূপ। এই দেবতার তিনটি মুখ ও ছয়টি হাত। তাঁর ডানদিকের মুখ শ্বেতবর্ণের এবং বামদিকের মুখমন্ডল লালবর্ণের। তাঁর হাতে একটি তরোয়াল, একটি পুস্তক, একটি তীর এবং একটি ধনুক রয়েছে।[1] আর্য ঐতিহ্য গুহ্যসমাজতন্ত্রের কেন্দ্রীয় দেবতার নাম নীলাভ কালো বর্ণের অক্ষোভ্যবজ্র। তিনি পাঁচ ধ্যানী বুদ্ধের অন্যতম অক্ষোভ্যের একটি রূপ। অক্ষোভ্যবজ্র তাঁর হাতে পাঁচ ধ্যানী বুদ্ধের বাকি চার বুদ্ধের বিভিন্ন চিহ্ন ধারণ করে থাকেন। তিনি তাঁর ডানদিকের হাতে বৈরোচনের চক্র ও অমিতাভের পদ্ম এবং রত্নসম্ভবের মণি ও অমোঘসিদ্ধির তরোয়াল ধারণ করে থাকেন। এছাড়াও তাঁর অপর দুই হাতে তিনি বজ্র ও ঘন্টা ধারণ করে থাকেন।

তথ্যসূত্র

  1. Catherine Cummings, "A Guhyasamaja Tantra," in John C. Huntington, Bangdel Dina, Robert Thurman, The Circle of Bliss - Buddhist Meditational Art, Serindia Publications, Inc., 2003. pp 432-448 (আইএসবিএন ১-৯৩২৪৭৬-০১-৬) (আইএসবিএন ৯৭৮-১-৯৩২৪৭৬-০১-৯)

আরো পড়ুন

  • Wedemeyer, Christian K. 2007. Āryadeva's Lamp that Integrates the Practices: The Gradual Path of Vajrayāna Buddhism according to the Esoteric Community Noble Tradition. New York: AIBS/Columbia University Press. আইএসবিএন ৯৭৮-০-৯৭৫৩৭৩৪-৫-৩
  • Geshe Tashi Tsering p.78 of 240 July 3, 2012. Tantra: The Foundation of Buddhist Thought Volume 6. London: Wisdom Publications. আইএসবিএন ১-৬১৪২৯-০১১-৩ আইএসবিএন ৯৭৮-১-৬১৪২৯-০১১-৭
This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.