গলগি বস্তু

সাইটোপ্লাজমে অবস্থিত কতকগুলো ঘনসন্নিবিষ্ট চওড়া সিস্টারনি,থলির মতো ভ্যাকুওল এবং ক্ষুদ্র ভেসিকল এর সমন্বয়ে গঠিত জটিল অঙ্গানু হল গলগি বস্তু বা গলজি বস্তু(ইংরেজিঃ Golgi Body)।স্নায়ুবিজ্ঞানী ক্যামিলো গলজি ১৮৯৮ সালে পেঁচা ও বিড়ালের মস্তিষ্কের কোষে গলজি বস্তু আবিষ্কার করেন।গলজি বস্তুকে কোষের প্যাকেজিং কেন্দ্র বলে। গলজি বস্তু প্রধানত প্রানীকোষে পাওয়া যায়। তবে উদ্ভিদকোষেও কদাচিৎ দেখা যায়।

বিস্তৃতি

প্রোক্যারিওটিক কোষে এবং কিছু ছত্রাক,ব্রায়োফাইট ও টেরিডোফাইটের শুক্রাণু,পরিণত সীভনল এবং প্রানীর লোহিত রক্ত কনিকায় গলজি বস্তু অনুপস্থিত।উদ্ভিদকোষে সাইটোপ্লাজম ছড়ানো থাকে,কিন্তু প্রানিকোষে এগুলো সাধারণত নিউক্লিয়াসের কাছাকাছি স্তরীভূত অবস্থায় থাকে বা নিউক্লিয়াসকেঘিরে রাখে।কখনও বা জালিকার মতো বিন্যস্ত থাকে।

গঠন

কোষের শারীরবৃত্তিক কাজের ভিত্তিতে গলজি বস্তুর গঠনে ভিন্নতা দেখা যায়। Dalton,Felix প্রভৃতি বিজ্ঞানীর মতে গলজি বস্তুতে ঝিল্লিময় তিনটি উপাদান থাকে,যথা- সিস্টারনি,ভ্যাকুওল ও ভেসিকল।

রাসায়নিক উপাদান

গলজি বস্তুর ঝিল্লি লিপোপ্রোটিন নির্মিত।লিপিডের মধ্যে রয়েছে প্রধানত লেসিথিনসেফালিন জাতীয় ফসফোলিপিডক্যারোটিনয়েড ,ফ্যাটি এসিড,ভিটামিন-সি প্রভৃতিও রয়েছে।গলজি বস্তু এনজাইমে পরিপূর্ণ।গুরুত্বপূর্ণ এনজাইমগুলো হচ্ছে- ADPase,Mg++,ATPase,CTPase,TTPase,সামান্য পরিমাণে গ্লুকোজ-৬-ফসফেট[1]

কাজ

১. লাইসোজোম তৈরি করা। ২. অপ্রোটিন জাতীয় পদার্থের সংশ্লেষণ করা। ৩. কিছু এনজাইম নির্গমন করা। ৪. কোষ বিভাজন কালে কোষ্পলেট তৈরি করা। ৫. প্রোটিন, হেমিসেলুলোজ, মাইক্রফ্রাইব্রিল তৈরি করা। ৬. কোষস্থ পানি বের করা ৭. এন্ডোপ্লাজমিক রেটিকুলাম এ প্রস্তুতকৃত দ্রব্যাদি ঝিল্লিবদ্ধ করা। ৮. বিভিন্ন পলিস্যাকারাইট সংশ্লেষণ ও পরিবহনে অংশ গ্রহণ করা। ৯. মাইটোকন্ড্রিয়াকে ATP উৎপাদনে উদ্বুদ্ধ করে। ১০. আক্রসম তৈরি।

তথ্যসূত্র

  1. গাজী আজমল,সফিউর রহমান। উচ্চমাধ্যমিক জীববিজ্ঞান (প্রথম পত্র)। গাজী পাবলিশার্স। পৃষ্ঠা ১২।
This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.