কর্ণাটকের নবাব
কর্ণাটকের নবাব (আর্কোটের নবাব নামেও পরিচিত) ছিল ১৬৯০ থেকে ১৮০১ সাল পর্যন্ত দক্ষিণ ভারতের কর্ণাটক অঞ্চল শাসনকারী শাসকের উপাধি। বর্তমান তামিলনাড়ুর অন্তর্গত আর্কোট শহর ছিল তাদের রাজধানী।
কর্ণাটকের নবাব | |||||
| |||||
রাজধানী | আর্কোট | ||||
ভাষাসমূহ | তামিল উর্দু তেলেগু | ||||
ধর্ম | হিন্দুধর্ম, ইসলাম | ||||
সরকার | রাজতন্ত্র | ||||
ঐতিহাসিক যুগ | মুঘল সাম্রাজ্য ব্রিটিশ ভারত | ||||
- | মুঘল সাম্রাজ্য | ১৬৯২ | |||
- | সংস্থাপিত | ১৬৯২ | |||
- | আর্কোটের যুদ্ধ | ২৩ জুন ১৭৫৭ | |||
- | ভাঙ্গিয়া দেত্তয়া হয়েছে | ১৮৫৯ | |||
বর্তমানে অংশ | ![]() | ||||
সতর্কীকরণ: "মহাদেশের" জন্য উল্লিখিত মান সম্মত নয় |
ইতিহাস
মুঘল সম্রাট আওরঙ্গজেব কর্ণাটকের নবাবদেরকে প্রতিষ্ঠিত করেন। তিনি ১৬৯২ সালে জুলফিকার আলি খানকে কর্ণাটকের প্রথম নবাব নিয়োগ দেন। রাজারাম ছত্রপতির নেতৃত্বাধীন মারাঠাদেরকে পরাজিত করার পুরষ্কার হিসেবে তাকে এই পদ দেয়া হয়।[1] কর্ণাটকের নবাবরা কৃষ্ণ নদীর দক্ষিণে বিস্তীর্ণ অঞ্চল নিয়ন্ত্রণ করতেন। নবাব প্রথম সাদউল্লাহ খান গিঙ্গি থেকে আর্কোটে তার দরবার স্থানান্তর করেন। তার উত্তরসূরি দোস্ত আলি খান ১৭৩৬ সালে মাদুরাই জয় করেন।
১৭৪০ সালে মারাঠারা আর্কোটে আক্রমণ করে। মারাঠাদের সাথে যুদ্ধে দোস্ত আলি, তার এক পুত্র হাসান আলি এবং বেশ কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি নিহত হন। এর ফলে দক্ষিণের দিকে মারাঠাদের কর্তৃত্ব বৃদ্ধি পায়। মারাঠারা আর্কোটের দিকে অগ্রসর হওয়ার পর আর্কোট বেশি প্রতিরোধ না করে আত্মসমর্পণ করে। চান্দা সাহেব ও তার পুত্রকে বন্দী করে নাগপুর প্রেরণ করা হয়। মুহাম্মদ আলি খান ওয়ালাজাহ ১৭৬৫ সালে নবাব হন।
ব্রিটিশ ও ফরাসিদের ক্রমবর্ধমান প্রভাব ও ঔপনিবেশিক যুদ্ধের ফলে কর্ণাটকে বেশ প্রভাব পড়ে। হায়দার আলি ও ফরাসিদের বিপক্ষে নবাব ওয়ালাজা ব্রিটিশদের পক্ষাবলম্বন করেন। এর ফলে তিনি বড় অঙ্কের ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়েন। এ কারণে তাকে তার এলাকার অধিকাংশ ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানিকে প্রদান করতে হয়।
১৩ম নবাব গোলাম মুহাম্মদ গাউস খান নিঃসন্তান অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন। এরপর ব্রিটিশরা স্বত্ববিলোপ নীতি অনুযায়ী নবাবী অধিগ্রহণ করে নেয়। ১৬৮৭ সালে রাণী ভিক্টোরিয়া কর্তৃক গাউস খানের চাচা আজিম জাহকে আর্কোটের প্রথম আনুষ্ঠানিক নবাবের পদে বসানো হয় এবং স্থায়ীভাবে করমুক্ত পেনসন প্রদান করা হয়। ভারত সরকার এই নীতি বহাল রেখেছে। ভারতের সংবিধান দ্বারা এই মর্যাদা সুরক্ষিত এবং রাজপরিবার নিজস্ব সুবিধা ও খেতাব ব্যবহার করে থাকে।
শাসকগণ
কর্ণাটকের সুবেদার নবাব
নাম | শাসন শুরু | শাসন শেষ | |
---|---|---|---|
১ | জুলফিকার খান নুসরাত জং | ১৬৯২ | ১৭০৩ |
২ | দাউদ খান পন্নি | ১৭০৩ | ১৭১০ |
৩ | প্রথম সাদউল্লাহ খান | ১৭১০ | ১৭৩২ |
৪ | দোস্ত আলি খান | ১৭৩২ | ১৭৪০ |
৫ | সফদর আলি খান | ১৭৪০ | ১৭৪২ |
৬ | দ্বিতীয় সাদউল্লাহ খান | ১৭৪২ | ১৭৪৪ |
৭ | আনোয়ারউদ্দিন খান | ১৭৪৪ | ৩ আগস্ট ১৭৪৯ |
কর্ণাটকের অর্ধ-স্বাধীন নবাব
নাম | শাসন শুরু | শাসন শেষ | |
---|---|---|---|
১ | আনোয়ারউদ্দিন খান | ১৭৪৪ | ৩ আগস্ট ১৭৪৯ |
ইউরোপীয় প্রভাবাধীন কর্ণাটকের নবাব
নাম | শাসন শুরু | শাসন শেষ | |
---|---|---|---|
১ | চান্দা সাহিব | ১৭৪৯ | ১৭৫২ |
২ | মুহাম্মদ আলি খান ওয়ালাজাহ | ৩ আগস্ট ১৭৪৯ | ১৬ অক্টোবর ১৭৯৫ |
৩ | উমদাতুল উমারা | ১৭৯৫ | ১৮০১ |
৪ | আজিমউদ্দৌলা | ১৮০১ | ১৮১৯ |
৫ | আজম জাহ | ১৮১৯ | ১৮২৫ |
৬ | গোলাম মুহাম্মদ গাউস খান | ১৮২৫ | ১৮৮৫ |
- ধূসর সারি দ্বারা ফরাসি ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি বোঝানো হচ্ছে।
- হলুদ সারি দ্বারা ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি বোঝানো হচ্ছে।
আনুষ্ঠানিক নবাব
আমির | শাসন |
---|---|
আজিম জাহ | ১৮৬৭–১৮৭৪ |
স্যার জহিরউদ্দৌলা বাহাদুর | ১৮৭৪–১৮৭৯ |
ইনতিজামউলমুলক মুয়াজ্জালউদ্দৌলা বাহাদুর | ১৮৭৯–১৮৮৯ |
স্যার মুহাম্মদ মুনাওয়ার খান বাহাদুর | ১৮৮৯–১৯০৩ |
স্যার গোলাম মুহাম্মদ আলি খান বাহাদুর | ১৯০৩–১৯৫২ |
গোলাম মহিউদ্দিন খান বাহাদুর | ১৯৫২–১৯৬৯ |
গোলাম মুহাম্মদ আবদুল কাদির | ১৯৬৯–১৯৯৩ |
মুহাম্মদ আবদুল আলি | ১৯৯৩-বর্তমান |
আরও দেখুন
- কর্ণাটকের যুদ্ধ
- হায়দ্রাবাদের নিজাম
- তামিলনাড়ুর ইতিহাস
তথ্যসূত্র
- "Mughal Empire 1526-1707 by Sanderson Beck"। San.beck.org। সংগ্রহের তারিখ ২০১২-০৩-০৪।