কপটতা
কপটতা হল পুণ্য বা সাধুচরিত্রের এমন মিথ্যা বহিঃপ্রকাশ যেখানে ধর্ম বা নৈতিকতার সাপেক্ষে আসল চরিত্র বা প্রবৃত্তি কে গোপন রাখা হয় সাধারণ অর্থে মিথ্যা,ভন্ডামি,কৃত্রিমতা ।এটি এমন একটি কাজ যেখানে কেউ এমন আচরন করে যার সে নিন্দা করে । নৈতিক মনোবিজ্ঞানে এটি নিজের বলা নৈতিক নিয়ম নীতি মান্য করার ব্যর্থতা । ব্রিটিশ রাজনৈতিক দার্শনিক ডেভিড রান্সিম্যান এর মতে,"আরও অন্যান্য প্রকার কপটতার মধ্যে রয়েছে নিজে কোন কিছু না জেনেও তা জানার ভান করা, এমন ধারাবাহিকতার দাবি করা যাতে সে দৃঢ় নয় ,এমন আনুগত্যের দাবি করা যা সে পোষণ করে না ।"আমেরিকান রাজনৈতিক সাংবাদিক মাইকেল গার্সন বলেন,"রাজনৈতিক ভণ্ডামি হল মুখোশের সচেতন ব্যবহার যাতে জনগণ কে বোকা বানানো যায় এবং রাজনৈতিক স্বার্থ হাসিল করা যায় ।

কপটতা মানব ইতিহাসের শুরু থেকেই লোক জ্ঞান এবং প্রবাদ প্রবচন,বাগধারা ইত্যাদির বিষয় ছিল । ১৯৮০ এর দশক থেকে ইহা ব্যাপকভাবে আচরনগত অর্থনীতি , চৈতন্য বিজ্ঞান ,সভ্যতা সম্পর্কিত মনবিজ্ঞান , সিদ্ধান্ত গ্রহণ ,নৈতিকতা ,বিবর্তনসংক্রান্ত মনবিজ্ঞান ,নৈতিক মনবিজ্ঞান , রাজনৈতিক মনবিজ্ঞান , রাজনৈতিক সমাজবিজ্ঞান ,ইতিবাচক সমাজবিজ্ঞান ,সামাজিক মনবিজ্ঞান ,সমাজবিজ্ঞান ইত্যাদি গবেষণার প্রধান বিষয় হিসেবে বিবেচিত হয় ।
ব্যুৎপত্তি
কপটতা শব্দটি গ্রিক শব্দ ὑυπόκρισις (হিপোক্রিসিস), থেকে এসেছে।যার অর্থ "ঈর্ষান্বিত","নাট্যাভিনয়","অভিনয়","ভীরু", অথবা "ভণ্ডামি"। কপট শব্দটি গ্রিক শব্দ ὑποκριτής(প্রক্রিতিস) থেকে এসেছে । যা υποκρίνομαι (hypokrinomai κρίση, "judgment" »κριτική (kritikē), "critics") এর সাথে সম্পর্কযুক্ত ভাববাচক বিশেষ্য । সম্ভবত একজন অভিনেতার নাট্যের ভাষা এই ধরনের ব্যখ্যা বা অনুমানের জন্য দায়ী । বিকল্পভাবে বলা যায় শব্দটি গ্রিক উপসর্গ hypo-,যার অর্থ "নিচে", এবং ক্রিয়া krinein, যার অর্থ "টালা বা সিদ্ধান্ত নেয়া"।এভাবে শব্দটির আসল অর্থ ঊহ্য করে কোনকিছু টালার বা সিদ্ধান্ত নেয়ার অক্ষমতা । ঊহ্য এই অর্থে যে এটি কার নিজের বিশ্বাস এবং অনুভূতির সাথে সম্পর্কযুক্ত এবং এটি শুধু শব্দটির সমসাময়িক অর্থকেই নির্দেশ করে।
পক্ষান্তরে hypokrisis নির্দেশ করে যেকোনো ধরনের প্রকাশ্য অভিনয় (এতে বক্তৃতাদানও অন্তর্ভুক্ত)