উত্তর আমেরিকার ইতিহাস

উত্তর আমেরিকার ইতিহাস বলতে মহাদেশটিতে মানুষের বসতি স্থাপন ও জীবনযাপনের ইতিহাসকে বোঝানো হয়েছে। বেশিরভাগ বিশেষজ্ঞ মনে করেন যে আজ থেকে ৪০ হাজার থেকে ১৭ হাজার বছর আগের কোনও সময়ে মানুষেরা বেরিং প্রণালী পাড়ি দিয়ে এশিয়া মহাদেশ থেকে উত্তর আমেরিকা মহাদেশে প্রবেশ করে। তবে সাম্প্রতিক কিছু প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কার তারা হয়ত আরও বহু আগে, আজ থেকে প্রায় দেড় লক্ষ বছর আগেই এই মহাদেশে পদার্পণ করেছিল। এই আদি অভিবাসীরা মহাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বসতি স্থাপন করে। উত্তরে ইনুইট জাতি, দক্ষিণে আজটেক ও মায়া জাতির লোকেরা এদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য। এই জাতিগুলি একে অপরের থেকে বিচ্ছিন্নভাবে জীবনযাপন করত এবং তাদের প্রত্যেকের নিজস্ব সংস্কৃতি, সভ্যতা ও জীবনধারা ছিল। এশিয়া ও ইউরোপের বিভিন্ন জাতিদের সাথে তুলনা করলে আদিবাসী আমেরিকান জাতিগুলির নিজেদের মধ্যে আন্তঃযোগাযোগ ও বাণিজ্য তেমন ছিল না।

১০ম শতকে ইউরোপের নর্স জাতির লোকেরা প্রথম আটলান্টিক মহাসাগর পাড়ি দিয়ে উত্তর আমেরিকা মহাদেশের উত্তর-পূর্ব উপকূলে অবতরণ করে, তবে তারা কিছুদিন পরেই বসতিগুলি পরিত্যাগ করে ও উত্তর আমেরিকার সন্নিকটবর্তী দ্বীপ গ্রিনল্যান্ডে স্থায়ী বসতি গাড়ে। ১৫শ শতকের শেষদিকে ইউরোপীয় বিভিন্ন শক্তি আমেরিকা মহাদেশ পুনরায় "আবিষ্কার" করে এবং শীঘ্রই এখানে বিভিন্ন ইউরোপীয় দেশের লোক গণহারে অভিবাসন শুরু করে। তাদের চাপে আদিবাসী আমেরিকানদের হটে যেতে হয়। শেষ পর্যন্ত উত্তর আমেরিকা তিনটি প্রধান ইউরোপীয় শক্তির উপনিবেশ হিসেবে ভাগ হয়ে যায়। এরা হল স্পেন, ফ্রান্স ও যুক্তরাজ্য। উপনিবেশগুলি প্রথমে মহাদেশের বিভিন্ন সম্পদ আহরণের ব্যাপারে একে অপরের সাথে যুদ্ধবিগ্রহে লিপ্ত হয়। ধীরে ধীরে তারা নিজেদের স্বাধীনতার ব্যাপারে আগ্রহী হয়ে ওঠে। প্রথমে মার্কিন বিপ্লব এবং তারপরে মেক্সিকোর স্বাধীনতা যুদ্ধ ১৮শ ও ১৯শ শতকে দুইটি নতুন স্বাধীন রাষ্ট্রের জন্ম দেয় --- মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও মেক্সিকো। এরপর ১৮৫৭ সালে কানাডীয় পরিরাজ্যসংঘ হলে আধুনিক উত্তর আমেরিকার রাজনৈতিক মানচিত্র স্থিতিশীলতা লাভ করে।

This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.