ইনটলারেন্স

ইনটলারেন্স ১৯১৬ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত একটি নির্বাক মার্কিন চলচ্চিত্র।

কাহিনী সংক্ষেপ

মোট চারটি ভাগে এ ছবিতে গল্প বলা হয়েছে। বিভিন্ন শতাব্দী আর সংস্কৃতির গল্প ফুটে উঠেছে এ ছবিতে। প্রথম গল্পটির প্রেক্ষাপট মধ্যযুগের ফ্রান্সে নবম চার্লসের সময়ের। দ্বিতীয় গল্পটির মূল উপজীব্য যিশু খ্রিস্টের শেষের দিনগুলি। তৃতীয় গল্পটি গড়ে উঠেছে ব্যাবেলেনীয় সভ্যতাকে কেন্দ্র করে আর শেষের গল্পটি এক দরিদ্র বালিকার গল্প যার জীবনে দুর্ভোগ নেমে আসে সমাজিক উন্নয়কারীদের নিষ্ঠুরতায়। মা তার শিশুকে দোলনায় দোল খাওয়াচ্ছে এই সরল চিত্রকল্প দিয়ে সবগুলো গল্পকে একীভূত করা হয়েছে। বিশেষত্ব : গ্রিফিথের দ্বিতীয় ছবি ইন্টলারেন্স। প্রথম ছবি বার্থ অব আ নেশনে গ্রিফিত শৈল্পিক ও অর্থনৈতিক সাফল্য পেয়েছিলেন। কিন্তু সেই ছবি ঘিরে আজও বর্ণবিদ্বেষ আর উগ্র সা¤প্রদায়িকতার কলঙ্ক লেগে আছে। ইন্টলারেন্স যেন এ সবেরই জীবন্ত জবাব। গ্রিফিথ এই ছবির মাধ্যমে মানবিক বিদ্বেষ, হানাহানি আর ঘৃণার বিরুদ্ধে কথা বলেছেন। তৎকালীন পুঁজিবাদ, শ্রম ও সামাজিক অসঙ্গতির দ্বন্দ্ব্বকে তিনটি গল্পর সাথে মিলিয়ে তিনি এই অসাধারণ দৃশ্যকাব্য নির্মাণ করেছেন। চারটি গল্পের মাধ্যমেই নানা কালের মানব সমাজের অসহিষ্ণুতা বিভিন্ন ধর্মের প্রেক্ষাপটে তুলে ধরা হয়েছে। মজার বিষয় হলো, তার দেশ যখন প্রথম বিশ্বযুদ্ধে জড়িয়ে পড়তে যাচ্ছে তখনই গ্রিফিথের এই বিশ্ব শান্তি ও ভাতৃত্বের ছবির মুক্তি। ইন্টলারেন্সকে গ্রিফিথের শ্রেষ্ঠ কাজই শুধু নয়, বরং নির্বাক যুগের অন্যতম সেরা ছবি হিসাবে গণ্য করা হয়। এ ছবির বিশাল সেট ও সম্পাদনা আজও বিস্ময়কর।

বিশেষ তথ্য

  • এ ছবিতে গ্রিফিথ ৬০ হাজার এক্সট্রা ব্যবহার করেছেন।
  • ইন্টলারেন্স ছবির আরও দুটি সহ-নামকরণ পাওয়া যায়, যা হলো : সান প্লে অব দ্য এইজেস এবং লাভ’স স্ট্রাগল থ্র“ আউট দ্য এইজেস।
  • একটি প্রতিষ্ঠান দাবী করে যে, যিশুর ক্রুশবিদ্ধের দৃশ্যে ক্রসের চারপাশে অনেক বেশি ইহুদিকে দেখানো হয়েছে, রোমানদের দেখানো হয়নি। গ্রিফিথ এই দৃশ্যর ফুটেজ পুড়িয়ে ফেলে এবং আবার অধিক রোমান নিয়ে শুটিং করে।
  • নির্বাক যুগের শ্রেষ্ঠ এই চলচ্চিত্র বাণিজ্যিকভাবে ভীষণ অসফল। আগের ছবি বার্থ অব আ নেশনে গ্রিফিথ যা মুনাফা অর্জন করেছিলেন এই ছবিতে তার সবই খরচ হয়ে যায়। ক্ষতি ঠেকাতে গ্রিফিথ বেশ কয়েকটি হল থেকে এ ছবি সরিয়ে নেয়।
  • ১৯১৯ সালে এ ছবির ব্যাবেলিয়ন ও আধুনিক গল্পাংশ দুটোকে কেটে গ্রিফিথ আলাদা দুটো ছবি করে মুক্তি দেন। ছবি দুটির নাম : দ্য মাদার এণ্ড দ্য ল এবং দ্য ফল অব ব্যাবেলীয়ন।
  • যুক্তরাষ্ট্রে ব্যর্থতার মুখ দেখলেও সোভিয়েত রাশিয়াতে এ ছবি সাফল্য নিয়ে আসে। সেভিয়েত চলচ্চিত্রকার ও সম্পাদকরা এ ছবির সম্পাদনা কৌশল পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে অণুসরন করে এবং এ ছবি দ্বারা তারা ব্যাপক প্রভাবিত হয়। এ ছবি দেখেই বিখ্যাত চলচ্চিত্রকার পুদভকিন মস্কোর স্টেট ইন্সটিট্যুট অব সিনেমাটোগ্রাফিতে ভর্তি হতে অণুপ্রাণিত হন।
  • বিখ্যাত চলচ্চিত্র গ্রিড (১৯২৪) এর পরিচালক এরিখ ভন স্ট্রোহিম এই ছবিতে গ্রিফিথের একজন সহকারী ছিলেন এবং একটি চরিত্রে অভিনয়ও করেছেন।
This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.