আল-মা’আরি
আবুল আ’লা আল-মা’আরি (৯৭৩ খ্রি. – ১০৫৮ খ্রি.) ছিলেন একজন অন্ধ আরব দার্শনিক, কবি ও লেখক। তিনি আরবের আল-তানুখি[1][2][3] গোত্রের লোক।
জন্ম | ৯৭৩ সিই মারাত আল-নু'মান, হামদাইন আলেপ্পোর আমিরশাহী |
---|---|
মৃত্যু | ১০৫৮ সিই মারাত আল-নু'মান, মিরাদাসিদ আলেপ্পোর আমিরশাহী |
জাতীয়তা | আরব |
অঞ্চল | ইসলামী দর্শন |
ধর্ম | নেই (নাস্তিক অথবা শ্বরবাদী) |
আগ্রহ | সংশয়বাদ, বুদ্ধিবাদ, সন্ন্যাস, |
ভাবগুরু
| |
ভাবশিষ্য
|
ধর্মীয় বিশ্বাসকে আক্রমণ এবং ইসলাম ও নবিদের বক্তব্য হিসেবে দাবিকৃত ও বিবেচিত সত্যের অধিকারী অন্যান্য ধর্মকে মিথ্যা ও ‘সত্য হওয়া অসম্ভব’ বলে প্রত্যাখ্যান করে তিনি তার সময়ে একজন বিতর্কিত বুদ্ধিবাদী দার্শনিকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছেন। তিনি মুসলমান, ইহুদি ও খ্রিস্টানদের প্রতি সমানভাবে বীতশ্রদ্ধ ছিলেন। তিনি নিরামিষভোজী ছিলেন এবং প্রাণীদের অধিকারের (Animal rights) পক্ষে যুক্তি দিতেন।
২০১৩ সালে, তার মৃত্যুর প্রায় ১০০০ বছর পর, সিরিয়ায় দ্বন্দ্ব্ব চলাকালে একটি জিহাদী দল তার প্রতিকৃতির শিরোচ্ছেদ করে[4]। আল-মা’আরিকে আধুনিক আরব নাস্তিকরা ব্যাপকভাবে উদ্ধৃত করেন[5]।
জীবন
আবুল আ’লা মা’আরায় (বর্তমান নাম, মা’আরাত আল-নু’মান) জন্ম গ্রহণ করেন। তিনি মা’আরার তানুখ গোত্রের প্রসিদ্ধ পরিবার, বনু সোলায়মানের লোক ছিলেন। তার পৈতৃক পরিবারের লোকেরাই মা’আরা শহরের প্রথম ‘ক্বাদি’। বনু সোলায়মানের কিছু লোক ভালো কবি হিসেবে খ্যাত ছিলেন। আল-মা’আরি গুঁটিবসন্তের কারণে চার বৎসর বয়সে দৃষ্টিশক্তি হারিয়েছেন।[6]
১১ কিংবা ১২ বৎসর বয়স থেকে কবি হিসেবে তার পেশাগত জীবনের শুরু। তিনি সর্বপ্রথম শিক্ষিত হয়েছেন মা’আরা ও এলেপ্পোতে, পরে এন্টিওক ও সিরিয়ার অন্যান্য শহরে। এলেপ্পোতে ইবনে খালাওয়াহ্ বর্গের শিক্ষকদেরকেই তিনি সঙ্গী হিসেবে পেয়েছেন। যখন আল-মা’আরি নিতান্তই একজন শিশু, তখন (৯৮০/১ খ্রিস্টাব্দে) এই ব্যাকরণবিদ ও ইসলামি পণ্ডিতের মৃত্যু ঘটে। তিনি ইবনে খালাওয়াহকে হারানোর বেদনায় ‘রিসালত আল-ঘুফরান’ নামক একটি কবিতা রচনা করেন। আল-কিফতি প্রতিবেদন করেন যে, ত্রিপলি যাওয়ার পথে আল-মা’আরি লাতাকিয়ার কাছে খ্রিস্টিয় মঠ বা গির্জা পরিদর্শন কালে হেলেনীয় দর্শন (Hellenic philosophy) নিয়ে যে বিতর্ক তিনি শুনেছেন, তা-ই পরবর্তীকালে তার মধ্যে সংশয়বাদ ও অধার্মিকতার বীজ বপন করে। অবশ্য এটি কোনোকোনো ঐতিহাসিক, যেমন- ইবনে আল আদিম, প্রত্যাখ্যান করেছেন। তাদের মতে, অন্যান্য ইসলামি মতবাদের চেয়ে যেকোনো ধর্মতত্ত্বই তার মধ্যে প্রকাশিত হতে শুরু করেছিলো। তিনি বাগদাদেও আঠার মাস কেটেছেন। এখানে তিনি ঐ-সময়ের সাহিত্য-সংগ্রহগুলো ভালোভাবে গ্রহণ করেছেন। অর্থের অভাবে, এবং মায়ের অসুস্থতার কথা শুনে (অবশ্য মা তার পৌঁছানোর আগেই ইন্তেকাল করেন) তিনি প্রায় ১০১০ সালে মা’আরার নিজের শহরে ফিরেছেন।
সন্ন্যাসজীবন বেছে নিয়ে জীবনের বাকিটা সময় তিনি মা’আরায় কেটেছেন।
দর্শন
উৎস
- 1940 أبو العلاء المعري: نسبه وأخباره وشعره ومعتقده، تأليف أحمد تيمور باشا، ص.3، ط
- Miguel Asín Palacios, Islam and the Divine comedy, Routledge, 1968, আইএসবিএন ৯৭৮-০-৭১৪৬-১৯৯৫-৮, p. 55
- Encyclopædia Britannica
- France24, Jihadists behead statue of Syrian poet Abul Ala al-Maari, 14 February 2013
- CAFÉ THAWRA,On Being an Atheist in The Land of Moses Jesus and Muhammad, 13 January 2010
- Philip Khuri Hitti, Islam, a Way of Life, page 147. University of Minnesota Press