অ্যাবাকাস

অ্যাবাকাস পাটিগাণিতিক গণনা সম্পাদনের একটি প্রাচীন যন্ত্র, যাতে একটি কাঠের ফ্রেমের বসানো তারে লাগানো গুটি উপরে নীচে সরিয়ে গণনা করা হয়। ফ্রেমে বসানো একটি তারের উপর গুটিগুলি বসানো থাকে। তারগুলির সাথে লম্বভাবে একটি আড়াআড়ি দণ্ড থাকে যা গুটিগুলিকে দুইভাগে ভাগ করে।

একটি অ্যাবাকাস যন্ত্র

প্রতিটি তার দশমিক ব্যবস্থার একটি ঘর নির্দেশ করে। সবচেয়ে ডানদিকের তারটি হল এককের ঘর। তার বামপাশেরটি হল দশকের ঘর, ইত্যাদি। প্রতিটি তারে আড়াআড়ি দণ্ডের নিচে পাঁচটি গুটি থাকে, যা এক একক নির্দেশ করে। আড়াআড়ি দণ্ডের উপরে অবস্থিত তারে দুইটি গুটি থাকে, যেগুলির প্রতিটি পাঁচ একক নির্দেশ করে। উদাহরণস্বরূপ, দশকের ঘরে নিচের পাঁচটি গুটির প্রতিটি ১০ নির্দেশ করে এবং উপরের দুইটি গুটি প্রতিটি ৫০ নির্দেশ করে। যে গুটিগুলিকে কোন সংখ্যার অংশ হিসেবে গণ্য করা হবে, সেগুলিকে আড়াআড়ি দণ্ডের উপরে বসানো হয়।

ইতিহাস

অনেক প্রাচীন সভ্যতা অ্যাবাকাস ব্যবহার করত। রোমানদের অ্যাবাকাস ছিল ব্রোঞ্জ নির্মিত লিপিফলক।[1] লিপিফলকটি খাঁজকাটা ছিল। গোলাকৃতির গুটিগুলি গড়িয়ে যেতে পারত। রোমানদের অ্যাবাকাস পরবর্তীকালে মধ্যপ্রাচ্যে এবং দূরপ্রাচ্যে ব্যবহৃত হয়েছে। মধ্যযুগীয় ইংল্যান্ডে অ্যাবাকাসের একটি সরলীকৃত রূপ ব্যবহার করা হত। দ্বিতীয় শতকে চীনদেশের সাহিত্যে অ্যাবাকাস ব্যবহারের উল্লেখ পাওয়া যায়। কিন্তু ত্রয়োদশ শতাব্দীর আগে চীনদেশে অ্যাবাকাস তেমন ব্যপকভাবে ব্যবহৃত হয়নি। রোমান অ্যাবাকাস এবং চৈনিক এবাকাসের মধ্যে কিছুটা পার্থক্য ছিল। চৈনিক অ্যাবাকাসে প্রতিটি পর্যায়ে একটি করে গুটি বেশি থাকত এবং গুটিগুলি তারের উপর লাগানো থাকত। পঞ্চদশ শতাব্দীতে জাপানে অ্যাবাকাসের ব্যবহার শুরু হয়। ঊনবিংশ শতাব্দীতে এর একটি উন্নত সংস্করণ প্রচলন হয়। চীন ও জাপানের কিছু কিছু অঞ্চলে এখনও অ্যাবাকাসের প্রচলন আছে। চীনে অ্যাবাকাসকে বলে সুয়ান পান (Suan-pan)। জাপানে বলা হয় সরোবান ( Soroban)।

তথ্যসূত্র

  1. বাংলা একাডেমী বিজ্ঞান বিশ্বকোষ, প্রথম খন্ড
This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.