অরুণেশ ঘোষ

অরুণেশ ঘোষ ( জন্ম: ২৯শে ডিসেম্বর, ১৯৪১-মৃত্যু: ২৪শে আগস্ট, ২০১১) বাংলা সাহিত্যের একজন প্রখ্যাত কবি, প্রাবন্ধিক, নাট্যকার, ঔপন্যাসিক ও অনুবাদক। ১৯৬৫ সালে কয়েকজন আন্দোলনকারী ( অর্থাৎ শৈলেশ্বর ঘোষ এবং সুভাষ ঘোষ ) হাংরি মামলায় যখন রাজসাক্ষী হয়ে যান, আন্দোলনটি ভেঙে গিয়েছিল। সাত দশকের মাঝামাঝি অরুণেশ ঘোষ তার "জিরাফ" পত্রিকার মাধ্যমে হাংরি আন্দোলনকে পুনরায় জীবিত করে তোলার প্রয়াস করেন।

অরুণেশ ঘোষ
অরুণেশ ঘোষ
জন্ম(১৯৪১-১২-২৯)২৯ ডিসেম্বর ১৯৪১
মৃত্যু২৪ আগস্ট ২০১১(2011-08-24) (বয়স ৬৯)
জাতীয়তাভারতীয়
পেশালেখক
পরিচিতির কারণকবি, প্রাবন্ধিক, নাট্যকার, ঔপন্যাসিক ও অনুবাদক

জীবনী

তিনি উত্তরবঙ্গের কোচবিহার জেলার মাথাভাঙা গ্রামে বসবাস করতেন এবং নতুন হাংরি আন্দোলনকে জীবিত করে তোলার প্রয়াসে উত্তরবঙ্গে প্রায় কুড়ি জন কবি ও লেখককে উদ্বুদ্ধ করেন। নতুন হাংরি আন্দোলনকারীদের মধ্যে পরবর্তীকালে যাঁরা খ্যাত হয়েছেন তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন ছোটোগল্প লেখক অলোক গোস্বামী, এবং কবি রাজা সরকার , নিত্য মালাকার, জীবতোষ দাশ, সমীরণ ঘোষ, মনোজ রাউত, বিকাশ সরকার, সুব্রত তায়, নকুল মণ্ডল, তনুময় সরকার, দিবাকার ভট্টাচার্য, বিজয় দে, অন্যমন দাশগুপ্ত, জামালুদ্দীন, অনুভব সরকার,রাজীব সিংহ, মলয় মজুমদার, সুমন্ত ভট্টাচার্য, অরুণ বণিক, সেলিম মুস্তফা, রসরাজ নাথ প্রমুখ। । উচ্চশিক্ষিত হওয়া সত্ত্বেও তিনি সারাজীবন নিজের গ্রামে বুনিয়াদি স্কুল শিক্ষক ছিলেন। গ্রাম ছেড়ে যেতে চাননি কলকাতায়। গ্রামের বাড়িতে একান্নবর্তী পরিবারের তিনিই ছিলেন কর্তাব্যক্তি। সেকারণে তাকে ব্যতিক্রমী গৃহস্হ কবিও বলা হয়। তিনি বিশিষ্ট সাঁতারু ছিলেন কিন্তু তা সত্ত্বেও পুকুরে স্নান করার সময়ে জলে ডুবে মারা যান। তিনি আত্মহত্যা করেছিলেন কিনা এ-বিষয়ে আলোচকদের মাঝে সংশয় আছে। পশ্চিমবঙ্গের রাজনৈতিক অস্হিরতা নিয়ে অত্যন্ত চিন্তিত ছিলেন। অনেকে মনে করেন যে তিনি শেষ জীবনে হতাশ হয়ে পড়েছিলেন।

নতুন ধারার হাংরি কবিতা

নতুন ধারার হাংরি কবিরা অরুণেশ ঘোষের নেতৃত্বে কবিতাকে নতুন ধারায় চালিত করার প্রয়াস করেছিলেন। কলকাতা মেট্রোপলিস থেকে বহুদূরে সম্পূর্ণ গ্রামীণ পটভূমিতে তারা নিয়ে এসেছিলেন গ্রাম ও গঞ্জের পাগল, গণিকা, মাতাল পুরুষ, বেশ্যালয়ের উঠোন, নগ্ন কিশোর, দালাল, ধর্ষক, খুনি, অপরাথী, সন্ন্যাসী, বিকলাঘ্ প্রসবঘর, ভাটিখানা, সিফিলিস, বেশ্যার সন্তান, গর্ভফুল, ভবঘুরে, গ্রামীণ রাজনীতি, দলতন্ত্র, ক্যাডারদের অত্যাচার, শ্মশান ইত্যাদির এক বহুরৈখিক সহাবস্হানের সন্ধান করেছেন তারা তাদের রচনায়। প্রথম পর্বের হাংরি কবিদের রচনায় যৌনতা ছিল মূলত শব্দের। নতুন পর্বের হাংরি আন্দোলনকারীরা আনলেন ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতায় জারিত জীবনযাত্রা। ব্যক্তিমানুষের প্রান্তিক অস্তিত্ব, কৌম জীবনের ব্রাত্য, অন্ধকার দিকগুলো বার বার উঠে এসেছে তাদের লেখনীতে। সামাজিক স্হিতিজাড্য, নিয়ন্ত্রিত জীবনচর্চার বিপ্রতীপ অবস্হানে তারা আস্হা রেখেছিলেন। অস্হিরতা, তীব্র সংঘাত ইত্যাদির ভিতর দিয়ে গূঢ় উপলব্ধি স্তরে নিয়ে যেতে চেয়েছেন পাঠবস্তুকে। তার সংগে মিশিয়েছেন উত্তরবঙ্গের লৌকিক যাদুবাস্তবতা, লোকজীবনের বর্ণময় জগৎ।

গ্রন্থাবলী

বইয়ের নাম ধরন প্রকাশের তারিখ
শব ও সন্ন্যাসীকবিতা১৯৮১
অপরাধ আত্মার নিষিদ্ধ যাত্রাগদ্য১৯৮৩
গুহা মানুষের গানকবিতা১৯৮৫
সহজ সন্তান যাঁরাকবিতা১৯৮৯
দীর্ঘ নীরবতাকবিতা১৯৯৪
বিপথিককবিতা১৯৯৫
মাতাল তরণীর‌্যাঁবোর ভাবানুবাদ১৯৯৫
জীবনানন্দগদ্য১৯৯৮
বর্বরের তীর্থযাত্রানাটক১৯৯৮
কাল কবীরের দোহাকবিতা২০০২
সন্তদের রাতগদ্য২০০২
জীবনের জার্নালগদ্য২০০২
কবিতার অন্ধকার যাত্রাকবিতা২০০৪
কবিতা সংগ্রহকবিতা২০০৬
পশুরাও অন্তর্লীণ হাসেকবিতা২০০৭

তথ্যসূত্র

    আরো পড়ুন

    • শুধুই অরুণেশ (২০১১ ) সম্পাদকঃ দেবাশিস দাস, প্রকাশকঃ বিবৃতি সাহিত্য পরিষদ, আমলাপাড়া, কোচবিহার, ৭৩৬ ১৪৬ , পশ্চিমবঙ্গ।
    This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.